প্রেম প্রেমাইস প্রেক্ষাপট-
"তোমাকে
বোঝাতে পারব
না বলেই
একসময় হারিয়ে
যাব আমি।
যখন তোমার
আশেপাশে আমি
ছাড়া হারিয়ে
যাবার আর
কিছু থাকবে
না"।
আজকে হার, হারা, হারিয়ে, হারানো, হেরো, হারু, হারা, সব্বাই একসাথে এসেছে একটা রাত্রির মধ্যে। ওই দেখো তিন বছর আগেকার একটি হ তার পিঠে আঙুলচোর র কে নিয়ে আসছে। ওকে আমি চিনি। ওই হারা দেখতে অনেকটা অসমাপ্ত ঘরে ফেরার মতো, মানে ধরে নাও তুমি সকালে এক অতিকায় ঘরে ফেরা পিঠে নিয়ে ইন্সটিটিউট গেছো, রাস্তায় ছড়াতে ছড়াতে। এবার ফিরছো সন্ধায় ওই ঘরে ফেরা গুটিয়ে নিতে নিতে, কুড়িয়ে নিতে নিতে, তোমার কোঁচড় উপচে পড়ছে, তুমি গেট পেরোলে, বাঁক ছাড়ালে, আর একটু ঘরে ফেরা তুলে নিয়ে দরজার পাল্লা দুটো যে চরম খাঁজ খাঁজ রেখে নির্লজ্জ অশ্লীলের মতো দণ্ডায়মান সঙ্গম হয়ে আছে, তাদের ফাঁক করে ভেতর আর বাহিরের মধ্যে উষ্ণ আলিঙ্গন করিয়ে শেষ ঘরে ফেরা যা একটা চাবির মতো দেখতে তাকে কুড়িয়ে তুমি মানুষ বাই মেঝে এরকম একটা ভগাংশ হয়ে বাসী হয়ে যাবে। গৃহ বাসী হয়ে পড়ে আছে, তুমি তাতে বাসী হতে যাবে, আর যাওয়ার পথে নিমতলা থেকে কয়েক কিলো চন্দ্রবিন্দু তুলে নিয়ে ঘরের মধ্যে ছড়িয়ে দেবে তাতে একেবারে কূঞ্জবন যেন। সব বাঁশী হয়ে যাবে, গোপিনী গোপিনী কিলবিল করছে বাতাসে। আজু কি আনন্দ, আজু কি আনন্দ, ঝুলনে ঝুলত, শ্যামর চন্দ। “ব্রজেশ্বর” ব্রজেশ্বর“ বলে তুমি ডাকবে নিজের বুকের ভেতরে, ওখানে রয়েছেন খোদাইচাঁদ নামে এক ছোট্ট পাথরের দেউল, রাধাকান্ত জীউর। মনে পড়ে তোমার, হৃদয়দানি নামে একটি গ্রাম, পাঁজর থেকে নেমে যেতে হয় ধমনীরোড ধরে দশ মিনিটের হাঁটা, লালপুকুর, তারপর বাঁদিকে ঘুরে একটা ঘর। ওই ঘরটা দূর থেকে দেখলেই বোঝা যায় ঘরটার খুন উন্মাদ ব্যক্তিত্ব আর ধ্বকধ্বক করে ডাকছে সবাইকে যে যাচ্ছে রাস্তা দিয়ে। বহুদিন অবধি লোকে জানতো ওটা একটা পাগলী, তারপর একদিন যখন আমি পাগলীর দরজা খুলে ঢুকে পড়তে পারলাম, এবং দেখলাম ভেতরে সমস্ত জলের তৈরী খাট বিছানা বালিস, কুঁজো, আলু, পটল, বেগুন রাখা আছে। তারপর আমি থাকতাম, লোকে তখন বুঝতে পারলো ওটা একটা পাগলী না, ওটা একটা পাগলের ঘর। তারপর তো সময় যায়, দিন যায় সব্বার শেষে মালপত্র গুছিয়ে তারিখ যায়। ত এমনি যেতে যেতে, আমিও তো থাকছিলাম খুব ঘরে, কোনদিন কাকাতুয়া কাকাতুয়া খেলছি ঘরের বোতামদের সাথে, ঠোঁট দিয়ে কামড়ে। কোনদিন পালং শাক, লেটুস পাতা নিয়ে এসে খুব সবুজী করছি। লোকে জানতো পাগলী, তারপর আমাকে থাকতে দেখে জানলো ঘর। এবারে যেসব ঘর খুব চাপা চাপা হয়,ভূমিকম্পে দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে অনড় বসে থাকে। চোখে শোঁ শোঁ করে নেমে যায় কূয়ো। মানুষের শারীরবৃত্তীয় চক্রের মতো ঘরটারো জাগরণ হতো। তবে কবেকার বিস্কুটউদাস পাগলী থেকে ঘর হয়েছে, তাই অনিয়মিত ছিলো চক্র। কিন্তু জাগরণ ঘুরে ঘুরে আসতো। জাগরণের গায়ে জঙ্গলের তৈরী জামা। আমি দেখতাম ঘরটা মাঝে মাঝে মনে চেপে বেরিয়ে যেত।
ঘরটা খুব ভালো মন ড্রাইভ করতে পারে। যুধিষ্ঠির তো বককে বলেইছিলো সবচেয়ে দ্রুতগামী হলো মন। তারওপর মনের চাকা নেই, মনের ধোঁয়া নেই। স্লেজগাড়ির মতো আলোর ডবল গতিবেগে শোঁ শাঁ চলে যাচ্ছে। আরে দুত্তোর, কোথথেকে যে কোথায় যাচ্ছি, বলছিলাম ঘরটা দারুন মন ড্রাইভ করে, লাইসেন্স পেয়ে গেছে। কিন্তু গার্জেনগঞ্জ এর পার্কিং থেকে রোজ সকালে মন নিয়ে আসতে হয়, রাত্রে বেলা গার্জেনগঞ্জে মন রেখে আসতে হয়। গার্জেনগঞ্জে খুব কড়া নিয়ম। মন পার্কিং এর আগে গলা ফুল জড়াতে হবে, নইলে ফাইন সিটবেল্ট পরার মতো। তারপর ঘুমের ওপর চুমু রাখতে হবে, চুমুর ওপর ঘুম রাখলেই গেলো। এইসব হ্যাপা করে তবে মনযানচলাচলের পারমিট পাওয়া যায়। ঘরটা বলছিলো একদিন ভারি দুঃখ করে, সেই সোনার দিন কবে আসবে গো? মনের পার্কিং লাগবে না, ট্র্যাফিক আইন মানতে হবে না। এ্যাক্সিডেন্টের পর খিলখিল করে হেসে ওঠাটা দস্তুর হবে। আমি ঘরটার পিঠে আলতো করে করতল আর আমলকী রাখি, দুটোকে মিশিয়ে আমি একটা স্পেশাল তালু তৈরী করেছি। যা দিয়ে ছুঁলে ছোঁয়াটা যেন নরমে একটা গড়ানো চাপা অনুভূতি দেবে। ঘরটার পিঠে হাত রেখে দেখি তার দেওয়ালের ভেতরে কতো কতো সেলাই!! গুণে শেষ করা যায় না। জিজ্ঞেস করলেই বল, ও কিছু না, আমি সেলাই জমাই। মংলু, আমার একটা ছোটো মন আমাকে বলেছে “আমার না দাদা মনে হয় ঘরটা সুতো দিয়ে তৈরী”। আমি বলি “দূর তাই কি করে হয়, দেওয়াল দাঁড়িয়ে আছে দেখছো”। ঘরটা যখন রাত্রে মুঠো মুঠো নিঝুম খেত, আমি খালি বসে থাকতাম ওর পাশে। দেখতাম কি অপরূপ অন্যমনস্কের ভাণ্ডার। কখনো জানালার একটা পালা দিয়ে হাওয়া চুলকোচ্ছে, কখনো আবার খুব নটখটি হয়ে উঠছে এক পশলা হয়ে। কিন্তু ঘরটার ভেতরে এত সেলাই কেন। আর প্রত্যেকটা সেলাই ক্ষত টু ক্ষত একটা রাস্তা করে দিয়েছে যাতে উদাসটুকরী দুলতে দুলতে চলে যায় এক থেকে আরেক।
তারপর তো সময় যেতে, সময় যেতে যেতে, সময় যেতে যেতে যেতে, একদিন আমাকে হাট করে খুলে ফেললো কে। হৃৎপিণ্ড ফুসফুস সমস্ত কিছু খোলা, গায়ে একটাও সুতো নেই, কে খুব মন দিয়ে দেখছে, তার চোখগুলো কুবোপাখির মতো, তার নিঃশ্বাসে অনেক ওজন ভারি হয়ে আছে। তাকিয়ে আছে আমার দিকে। দেখি ও বাবা ঘরটার তো একটা বাগানের মতো শরীর আছে। তাতে কতো কি টুকরো পড়ে আছে। কেউ খেয়ালও রাখে না, কোথাও দুধের প্যাকেট, কোথাও আলুর খোসা,কোথাও ডিম রাখার কার্ডবোর্ড। এক হাঁটু ঘাস। কেউ জল দেয় না, তবু সোঁদা হয়ে থাকে। আমি লক্ষ্য করিনি প্রথমে। যেদিন দেখলাম, আহা রে, কি আহা রে টাই না লাগলো। বেচারা জানে না এরকম বাগানের মতো দেহ কতোটা অভ্রমাখা বিরল বিশেষ, একমাত্র গন্ধর্বকন্যাদের থাকে, কিছু নাগকন্যাদেরও থাকে। আমি আসতে আসতে বোঝালাম কি করে বাগানের সুর ধরতে হয়, তান করতে হয়, তারপর জোড়, ঝালা, তারপর সওয়াল জবাব সওয়াল জবাব, সওয়াল জবাব, গভীরে সর্বদা এক অটুট উচ্চতা ধরে যায়, ওকে বোঝালাম অল্প আঙুল উড়িয়ে। কম্পন আর কম্পাঙ্কের ব্যবহার যে একইরকম নয় ঘর থুড়ী বাগানবতী জানতেনই না। ওই সময়েও ওই হ আর র আসতো খুব, তবে হার হারু হারা হেরো হারিয়ে হারানো এইসব হয়ে নয়। হারেরে রেরে হারেরে রেরে হয়ে। বাগানবতীর সাথে আমিও ভাবতাম, তখন ঘরের বদলে বাগানে হ্যামক টাঙিয়ে থাকি, রোজ সকালে এক দোয়াত কালি আর পাঁচটা পেনসিল খাই, বাগানবতী আমাকে দেখে বলে “মরন!! এইভাবে নাকি উনি লেখার বীরপুরুষ হবেন!! হুঁঃ”। আমি মুখে নির্মল হাসি রাখতাম কিন্তু ভেতরে ওই মরণ যেন শ্যামসমান শিউরে দিয়ে যেত। এরকম দেখেছো কখনো। কোনো কোনো রাত যাকে রাত্রিকলকল স্লুইশ গেট খুলে যায় আর আকশে জ্যোৎস্না লিক করে। আমি বাগানে ঠোঁটে দেখি বুনো হলুদ গোলাপ ঝাড় হয়ে ঝেঁপে এসেছে। ওপরের ঠোঁটে সন্ধ্যামালতী। সেই গোলাপঝাড় কাঁটা সহ কামড়ে ধরলে, আহা কি তীক্ষ্ণ সেই ভেদ। বাগানের মাথায় ছাতিম চুল তাই কি মদালদসা গন্ধ…… আর আমাদের আশ্চর্য গুপ্তধনের গুহা ও মাঠ ঘাট ছিলো যেন শ্যাওলায় তিলোত্তমা লাগছে তৃতীয় নয়ন। তখন নক্ষত্র থেকে ঘন এ্যাক্রিলিক গড়িয়ে পড়ছে পৃথিবীতে।
ওই যে বলেছিলাম হারের হারেরে রেরে, এসেছিলো, হ আর র তো। স্বভাব যাবে কোথায়। এমনি তে হ মানে ঘোড়া , র মানে কাঁচা। কাঁচা ঘোড়ার স্বভাব। আমরা ভাবলাম আহারে, বেচারা কতো খুঁজেপেতেই না দু মুঠো ডাকাতি করতে পায়, তাই থাকতে দিয়েছিলাম আমি আমার হ্যামকের তলায়। ঠিক ওই মুহূর্তে একটি আলতাগোলা বাগানবতী, তার দুই বুকে দুটি স্থলপদ্ম গাছ। ফেনকমল লাগানো রয়েছে নাভিতে ব্রহ্মকমল অবধি। তারপর শ্যাওলা দ্রিদিম, ঘন সবুএর কুচো ফুল। ওখানে দিয়ে যেসব হাওয়ারা হেঁটে যায়, আমি তাদের মাঝরাস্তায় ধরে লুন্ঠন করি গন্ধ, ঢুকিয়ে নি নিঃশ্বাসে। আমার হ্যামক দোলে উলুক উলুক। আমি কখনো মায়াতে কাতর হয়ে পড়ি, কখনো বা ভাবনায় ঝনঝন করে উঠি। কখনো উঠে গিয়ে দেখি বাগানের পিঁপড়ে, ঝিঁঝি পোকা এরা সুখী আছে কিনা। সারা বাগানবতীর গায়ে আ আর হ ছড়িয়ে ছড়িয়ে রাখি। চন্দ্রাচ্ছন্ন নিঃশ্বাস বাগানের তাতে ঘন হাস্নুহানা অল্প অল্প দুলছে। আর যা বলতে পারি না, কখনো, কোনোদিনই পারলাম না। বাগানবতীর ঠোঁটের কাছে গিয়ে, খুব কাছে গিয়েও চুপ পেয়ে যেত। কি বলতে চাইতাম, সমস্ত গাছপালা, পপি, জারবেরা ডালিয়া, কড়াইশুঁটি, জলের সরু পথ খোঁচা ডাল, উলঝনিয়া চুল সব নিয়ে আমাকে কেটে ছিঁড়ে খাও। গলায় কামড়ে কন্ঠস্বরের ঘন রক্তগুলো ঢুকিয়ে নাও তোমার নিঃশ্বাসে। আমাকে আছাড়ি পিছাড়ি করো। দস্যুতম আততায়ীর মতো ক্ষত বিক্ষত আঁচড়ে কামড়ে দাও। আহ, কি জুড়োনো টাই না জুড়োবে, এতদিনের হার হেরো, হারান, হারিয়ে হারালো, হারানি। আমাকে প্রচণ্ড হারিয়ে দাও অত্যাচারীর মতো। যেন না উঠতে পারি উল্লম্ব হয়ে দেহ। ছিন্নমস্তার মতো নেচে যাও আমার বুকে, ঠোঁট ছইঁড়ে নিয়ে চলে যাও। যেখানে যতখুশী খাবলা মাংস তুলে নাও। আমি চাই আমাকে জঘন্যভাবে হরিনখাওয়া করে খাও। এত এত পাথরের ফুলস্টপ যেখানে সেখানে শরীরে, টনটন করে। যে যা দিয়ে শাস্তি দিয়েছে সেই শাস্তি অস্ত্রটাও গেঁথে রেখে গেছে। তাই আমার বুকের ডানদিকে দুমড়ে মুচড়ে রাখা আছে চাবুক, ঘাড়ের কাছে অসংখ্য থাপ্পড় জমানও রয়েছে। চুল সরালে দেখা যাবে কতো লাথি গাঁথা আছে মাথায়। এসব সমেতি বাগানবতী আমায় তার ওপর হ্যামক টাঙাতে দিয়েছিলো। আমি তার মতো শস্য শ্যামলা কিছুই দেখিনি। কোনো অরূপের অভিজ্ঞতা নেই আমার তদভিন্ন।
তারপর যা হয়, হারেরে হারেরে রেরে , হ আর র শুনে বাইরের লোকে টিটকিরি দেয় হেরপো তুমি যতো তাকে বোঝাও, আছড়ে পড়ো পায়ে যে ওটা হারেরে, হারে নয়, সে কিছতেই শুনবে না। আমাদের দেখায় তখন এক লযান্ডস্কেপ ডিজাইনার গার্ডেনের মতো। তখনই মেধা ফেটে যায়।
কিন্তু আমি জানতাম একটা পঞ্চম নভেম্বরের মতো দিন আসবে। যেদিন এক দিনে আমার গতো ছ বছরের সবকটা ক্ষত একসাথে উদ্যানের মতো দেখাবে, কথা বলবে। আমি দেখবো যেখানে চাকুর দাগ ছিলো, সেখানে মেথী শাগ হয়েছে। যেখানে ছিলো সবুট লাথির স্ট্যাম্প, সেখানে দুলছে সূর্যমুখী। একদিনে হয়ে গেছে। আমার তো কেউ নেই। ওই একজন যাকেলোকে ভাবতো পাগলী তারপর আমি তাকে খুলে ঢুকে যেতে জানতে পারলাম সে ঘর, তারপর আমাকে খুলে ফেললে জানতে পারলাম সে বগানবতী, তারপর বাগানে কর্কশ মানুষেরা নড়াচড়া করলে আমি হঠাৎ মায়ের ধরা হাতের মতো হারিয়ে গেলাম। আর বাগানবতী বাবার ধরা মুঠোর মতো মিলিয়ে গেল। লজেন্সের সূত্র অনুসারে আবার যখন মৃদু শ্যাওলার সংবাদ পেলাম তখন যেত গিয়ে দেখি কি কান্ড। ওই পাগলী তো আমার মতো অ আটকানো মানুষ। সে করেছে ঘর বা গৃহের বাসী, বাগানের বাসী সব জমিয়ে রেখেছে আর মুঠো মুঠো চন্দ্রবিন্দু ছড়াচ্ছে্, আর লীলা গোপীনি নামে এক ফাঁকা তার পরম বন্ধু। আজু কি আনন্দ, আজু কি আনন্দ, ঝুলনে ঝুলত শ্যামরচন্দ। ঠোঁটে থেকে হেঁটে যাবেন, বৃন্তের কাছে এসে যানবাহন বদলাতে হবে, তারপর ভেতরে ঢুকে আমুলিয়া সফেদ এর মধ্যে দিয়ে হেঁটে হেঁটে গেলে বাঁদিক টার্নিং হৃদয়দানি গ্রাম, তার পাশে বুক জুড়ে ধান গল, হইহই করছে। আর এক কোনায় খোদাইচাঁদের দেউল, তাতে রাধাকান্ত জিউর বিগ্রহ। কষ্টিপাথর। “লাগে না?” পাগলী ছিলো এক আলোর গন্ধ দিয়ে তৈরী, আতরের টুকরো দিয়ে সাজানো, চিকের আড়াল দেওয়া আগুন, লে-লি-হান নামে চীন দেশের শিখা, তার ছিলো আপেলের মায়ের নিজের হাতে তৈরী গাল। ফু দিয়ে ফোলানো রয়েছে। আর ছিলো স্বর্ণস্ফটিকের হৃদয়, আমি তার বুকটিকে লুকিয়ে ডাকতাম অমৃতসর, স্বর্ণমন্দির। আহা অমৃতে সর ভেসে আছে। সে কি আমায় চিনতে পারবে, একসময় সে আমার ঘর ছিলো, আমি সম্পর্কের ছিলাম তার ঘরের ভেতর, আমাকে কি থাবার আঘাতে লাবন্যপ্রভা মাখাবে।
দেখি একা একা, কোনো একটা কুট্টুস নক্ষত্রের মতো সে সারা গায়ে ছাদ মুড়ে বসে আছে, হারা, হারিয়ে, হারানো, হারালে, হারাবে পিলপিল করছে চারপাশে। সামান্য দিন আগে পৃথিবীর প্রথম রাজকুমারীর গাছ সে নিজের ভেতরে জন্ম দিয়েছে, তাতে ফুটেছে ঈশ্বরফুল। আমি র হ অর্থাৎ কাঁচা ঘোড়ার মতো গিয়ে লাফিয়ে পড়ি সঅটান। কারন আজ আমার সমস্ত পুরোনো বনেদী ক্ষতগুলি বাগানবাড়ির মতো আশ্চর্যময়ী হয়ে গেছে। আমি তার টুঁটি কামড়ে ধরি। বলি আমার শব্দের রক্ত খাবি না?
দারুণ রসায়ন !
ReplyDelete