গানের খাতা
শচীন দেববর্মণ
সেকালের অবচেতন কোনওদিন আকস্মিক হবে ব’লে সিঁড়ির গায়ে মাখিয়ে রেখেছে
সর্দিজ্বর
শোনা যায়, শেকড় জমালে আতসকাচ
চিনতে পারে না মানুষ
মানুষ তখন ঝুঁকি নিয়ে শচীন
দেব শোনে।
তার একচালা জিন ছিঁড়ে শাদা রঙের
জট ধ’রে কেউ কেঁদেছিল
সীমান্ত নামিয়ে রেখেছিল পিলু
রাগের দেওয়ালে
রণেন রায়চৌধুরী
শিহরণ সহজে জাগিয়ে
রাখা স্তূপ
মেদ ও দুঃখ ঠেলে সর্বমাস ফেব্রুয়ারী
রণেনবাবুর সুফী ভেদ ক’রে যে বাঙলা আসে
চাদর ঝাড়তে গিয়ে কররেখা কররেখা কোথায় ঢুকেছিস
শ্বাস ও নাদ নিয়ে মৃতের ভেতরে চলাচল করছে বাধ্য
কার্তুজ
সংকেত বোঝার জন্য মুদ্রায় দাঁড়িয়ে পাগলও বড়ো হয়ে উঠছে
জিভ ও কিছু সুতোকে আমার মনে হয় দ্বিধান্বিত
শান্ত
দাঁতের ফাঁক থেকে ইচ্ছে করে, তোমার বাড়ি যাই
গিয়ে রান্না করি, বেগুন ভর্তা, রুটি।
প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়
একা মোর গানের তরী ভ’রে উঠেছিল কতবার
ট্রেনগুলো জন্মাল উপুড় হয়ে
ট্রেনগুলো থামছে স্মৃতির
বাইরে
আমি টিপটিপ ক’রে বকুল ফুল
পড়তে দেখেছি পৃথিবীতে
শ্যামল মিত্র
এ’ যে বাজিকরের কথোপকথন
সময় বাজলো ঘড়িতেই
ঘাসের ওপর জ্যোৎস্না ছটফট
ক’রে প্রমাণ করছে এই গান
আব্বাসউদ্দিন
স্নায়ুকেন্দ্রের গোসলখানায় আমি তখন প্রবাল গুনছিলাম
সূচীপত্রের কষ্ট বই তো কখনও
জানবে না
এই গলা, লালন হয়ে দাঁড়াল
আমার রসুলের মাঝখানে
হিমাংশু দত্ত
আমার ডাক টানতে টানতে নিয়ে গেল যে সঙ্গীত
তার প্রস্তরমণ্ড এসে বসেছে
এই দেশে
পর্দার চেতনায় স্থায়ী একজন
গ’ড়ে তুলছে কী সব কথা
শ্যামল মিত্র রেকর্ডে
বসেছেন। সুর আপনার। বাইরে, হিম পড়ছে।
স্টুডিওয় আলো ফেটে পড়ছে
আসরের অনুরোধে
সলিল চৌধুরী
মনের জানালা ধরে ঝুর ঝুর ঝ’রে গেছে পৃথিবীর ঔরস
আমি কপালে হাত ঠেকাই
নমো, ঠাকুর নমো
হাওয়ায় চকচক করছে জোয়ার
সন্ধ্যা
মুখোপাধ্যায়
এখনও বুঝিনি আমি চাঁদ কেন চেয়ে থাকে সরসীর পানে
বরং, চৈতি ফুলের রাখী জমে
ওঠে
তার আদল গড়ে তুলতে চাইছে
স্মৃতি
রেড়ীর তেলের ভেতর স্তরে
স্তরে সন্ধ্যা আসছে
সকালে ঘুম থেকে জেগে পড়তে বসা এই কবিতাগুচ্ছ আস্ত একটা দিনকে সঙ্গীতময় করে দিলো। অভিনব! চমৎকার!
ReplyDelete