বাক্‌ ১০৯ : মজনু শাহ


মুহূর্ত

হ্যাঁ, মুহূর্তই হয়ে উঠতে পারে মিথ। এবং রাক্ষস।
নগ্ন কোনো হোর মেখে নিচ্ছে পমেটম এই মুহূর্তে।
সমস্ত পমেটম ফুরাবে আজ তবু হাল্লা ফুরাবে না এই
মৃত পাতাদের। ফুরাবে না মায়াঞ্জন। তোমার চোখের।
সবজান্তা পাখি তুমি। চ্যূত, একমাত্র কুসুম। আমি
গেয়ে চলি ছিন্ন কোনো কলি। দেবদারুশীর্ষটিকে
সহসামনে হতে থাকে মর্মরমূর্তি। মরণবাহী ট্রেকার থেকে
আজ চুপিচুপি নেমে আসে আমার অধিদৈবিক লেখা। 


টগর

মনে করো এই টগর, এর কেউ নাই। অন্য একটা টগর
কখনো তাকে চুম্বন করেনি। তবু কি সে অসুখী? এর চাঁদ
পরী হাওয়াযান খ্যাতি, কিছুই নাই। একে তুলে নিয়ে গিয়ে
ইলেকট্রিক শক দাও, বা টাকা সাধো অনেক, তবু সে কিচ্ছুটি
বলবে না। নক্ষত্রের আলো লিখে চলেছে তার আত্মজীবনী। 



কিছুকাল

কিছুকাল রাক্ষসের সঙ্গে খেলাধুলা। কিছুকাল শরসন্ধান। রাজশকুনেরা
ঝিমায় দূরে দূরে। ভগ্নচক্র শকটের ন্যায় পড়ে থাকা কিছুকাল আবার।
খাঁচা-ভর্তি খঞ্জনা আর কাঠের বন্দুক নিয়ে পথে পথে ঘোরা।
কিছুকাল ঘরকুনো, ভবিষ্যৎগণনার জলপাত্রে ডুবে আছে
                   একটি সেগুন পাতাএইসব এক মনে দেখা।



স্বপ্নেও তুমি ব্যর্থ

স্বপ্নেও তুমি ব্যর্থ। স্তব্ধ ভাষা। স্তব্ধ টেক্সচার। রচে অন্য কেউ।
ধীমন্ত লেখক রাক্ষসের মতো হামাগুড়ি দেয় ময়দানে।
জুলেখাদের লিচুবাগানে রবীন্দ্রনাথের ভূত কী যেন লিখছে।
হয়ত বজ্র কোনো পঙক্তি। হয়ত ক্ষিপ্র কোনো অনশ্বর রেখা।


চলো হে ময়ূর 

চলো হে ময়ূর, এবার অলঙ্কারশাস্ত্র অবধি ঘুরে আসি।
এই অতিপ্রাকৃত ময়দান, অন্ধকার,
বিস্তীর্ণ জলপাইবাগান পেরিয়ে যাই।

বাক-পৃথিবী, অর্থাৎ অনেক উঁচু এই লৌহময়ূরের ছায়া
পার হয়ে যাই।


                                                                                   (চিত্রঋণ : Manuel Mendive)

5 comments:

  1. প্রতিটিকবিতা-ই ভীষণ ভালো লেগেছে

    ReplyDelete
  2. প্রতিটিকবিতা-ই ভীষণ ভালো লেগেছে

    ReplyDelete
  3. হ্রদের পাশে জলপাইবাগান...শকট ভুলে পরে আছি দীর্ঘ দীর্ঘ কালব্যাপী...

    ReplyDelete
  4. বাক্‌ ১০৯ সংখ্যার সেরা কবিতাগুচ্ছ! অনেক ধন্যবাদ এমন কবিতা পড়তে পেলাম বলে।

    আর সঙ্গে যে ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে, সেটিও দারুণ!

    ReplyDelete